গরমের জন্য মানব জীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। গাছপালাগুলো সব বিবর্ণরূপ ধারণ করেছে। শহরে যে পশুপাখিগুলো আছে সেগুলোও গরমে কষ্ট পাচ্ছে। এ ছাড়া যারা গাড়িতে যাতায়াত ও বিভিন্ন দালান-কোঠা নির্মাণের জন্য কাজ করছেন তারা অতি কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন। অত্যধিক গরমের কারণে মানুষ ঘর থেকে বের হতে দ্বিধা করছেন। তবে ঘরেও শান্তিতে থাকা দায়। কারণ শহরের ঘিঞ্চি এলাকায় এবং লাগোয়া বিল্ডিংগুলোতে ছোট দরজা ও জানালা দিয়ে স্বাভাবিকভাবে বাতাস ঢুকতে পারে না। তাছাড়া চারদিকে বড় বিল্ডিংগুলো বাতাস আটকে দেয়। যারা বস্তিতে টিনের ঘরে বাস করে তাদের ঘরের টিনশেড গরম হয়ে ঘরের তাপমাত্রা বেড়ে যায়। ফলে তারা সারাটা দিন বাইরে সময় কাটায়। আসলে জ্যৈষ্ঠ মাসে একটু বেশীই পড়ে। এ সময় অধিক গরমে ফলমূল তাড়াতাড়ি পাকে। ফলে আমরা নানারকম ফলমূল খেতে পারি। কিন্তু এবারের তাপমাত্রা দাবদাহের মতো পোড়াচ্ছে। মানুষ বিভিন্ন অসুখ-বিসুখের সম্মুখীন হচ্ছে। বিশেষ করে শিশুরা অত্যধিক গরমে হাম রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। অন্যান্য মানুষ পানির অভাবে পানিবাহিত রোগ-জ্বর, টাইফয়েড এবং জন্ডিসে আক্রান্ত হচ্ছে। এ অবস্থা মোকাবেলায় সতর্ক হতে হবে। এই গরমে আমাদের শরীর থেকে যে পরিমাণ লবণ পানি ঘামের আকারে ঝরে তার ফলে দেহের শর্করা শক্তি কমে যায়। সেই শর্করা শক্তি পূরণের জন্য বেশি করে পানি পান করা জরুরি। অত্যধিক রোদের তাপে সূর্যের অতি বেগুনী রশ্মি আমাদের দেহের কোষে ঢুকে বিপদে ফেলে দিতে পারে। তাই রোদের মধ্যে অবশ্যই ছাতা নিয়ে ঘুরতে হবে। গরমে ত্বক ও চোখের সুরক্ষার জন্য অবশ্যই ত্বকে সানস্ক্রিন ক্রিম লাগিয়ে ও চোখে সানগ্লাস পরে ঘুরলে ত্বক ও চোখ সুরক্ষা পাবে। শিশুরা যেন রোদের মধ্যে ঘোরাফেরা না করে সেদিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে। এ গরমে রাস্তাঘাটের ধুলাবালি অল্প বাতাসেই উড়ে বেড়ায়। যা আমাদের দেহের ঘামের সঙ্গে লেগে থাকে এবং কাপড়-চোপড়েও লেগে থাকে। তাই বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর গোসল করার সঙ্গে সঙ্গে কাপড়-চোপড় ও সাবান দিয়ে ধুয়ে ফেলা প্রয়োজন।
এ ছাড়া ও গৃহপালিত পশু-পাখির জন্য খাবার পানির ব্যবস্থা রাখা জরুরী। তাছাড়া এ গরমে রসালো ফলমূল খেতে হবে। যেমন-তরমুজ, আম, জাম, কাঁঠাল এবং লিচু ইত্যাদি। সবুজ শাক-সব্জি ও পানির চাহিদা ও শর্করার চাহিদা পূরণ করে। তাই এগুলো খাওয়া জরুরী। অত্যধিক গরমে ঘরের তাপমাত্রা কমানোর জন্য ঘরের সামনের পর্দা হাল্কা ভিজিয়ে ঝুলিয়ে দেয়া যায়। তবে সাবধান বেশি ভিজিয়ে রাখলে ঘরে অসুস্থতা বাড়বে। যাদের ঘর ছাদের গরমে উত্তপ্ত তারা ছাদে পানি ঢেলে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন। এ ভাবে গরমে সতর্কতার সঙ্গে গরম নামের ভাইরাসটিকে মোকাবেলা করতে পারি।
No comments:
Post a Comment