দুটোই মধ্যরাত। একটি ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ। আরেকটি ২০১৫ সালের ২১ নভেম্বর। প্রথমটি মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের শুরুর রাত। শেষটি মানবতাবিরোধী অপরাধের সাজা কার্যকরের রাত। মাঝখানে ৪৪ বছরের স্বাধীন বাংলাদেশ।
দিনভর টানটান উত্তেজনার পর গতকাল শনিবার দিবাগত রাত ১২টা ৫৫ মিনিটে কার্যকর হলো আরও দুই মানবতাবিরোধী অপরাধী সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরী আর আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদের মৃত্যুদণ্ড। সাকা চৌধুরী বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য। মুজাহিদ
জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল।
দিনভর টানটান উত্তেজনার পর গতকাল শনিবার দিবাগত রাত ১২টা ৫৫ মিনিটে কার্যকর হলো আরও দুই মানবতাবিরোধী অপরাধী সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরী আর আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদের মৃত্যুদণ্ড। সাকা চৌধুরী বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য। মুজাহিদ
এর আগে একই ধরনের সাজা কার্যকর করা হয়েছিল জামায়াতের দুই সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লা ও মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের।
কারা মহাপরিদর্শক (আইজি প্রিজনস) ব্রিগেডিয়ার জেনা
রেল সৈয়দ ইফতেখার উদ্দীন গত রাতে প্রথম আলোকে বলেন, সাকা চৌধুরী ও মুজাহিদের ফাঁসি রাতে একই সময়ে (১২টা ৫৫ মিনিট) কার্যকর করা হয়েছে।
কারা মহাপরিদর্শক (আইজি প্রিজনস) ব্রিগেডিয়ার জেনা
ফাঁসির সময় কারাগারের ভেতরে উপস্থিত ছিলেন এমন একজন পুলিশ কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, ফাঁসির সেল থেকে সালাউদ্দিন কাদের ও মুজাহিদকে তিন-চারজন মিলে ধরে
নিয়ে আসেন। তবে দুজনই খুব স্বাভাবিক ছিলেন। ফাঁসির মঞ্চে ওঠার সময় তাঁরা দোয়া পড়ছিলেন। মঞ্চে ওঠার পর কারা তত্ত্বাবধায়ক লিভার টানার সঙ্গে সঙ্গে দুজনেরই ফাঁসি কার্যকর হয়ে যায়।
সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী (৬৭) বিগত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে (২০০১-২০০৬) প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সংসদ-বিষয়ক উপদেষ্টা ছিলেন। এরশাদ সরকারের
আমলে ছিলেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়সহ তিনটি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে। জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মুজাহিদ (৬৮) বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সমাজকল্যাণমন্ত্রী ছিলেন। সাকা চৌধুরীর বাড়ি চট্টগ্রামের রাউজানে। মুজাহিদের বাড়ি ফরিদপুরে।
এর আগে মুক্তিযুদ্ধকালে করা অপরাধ স্বীকার করে সাকা চৌধুরী ও মুজাহিদ রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন করেন বলে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়। রাত ১০টার দিকে স্বরা
ষ্ট্রসচিব মোজাম্মেল হক খান প্রথম আলোকে বলেন, রাষ্ট্রপতি তাঁদের আবেদন নাকচ করেছেন। তবে সাকা চৌধুরীর ছেলে হুম্মাম কাদের চৌধুরী ও মুজাহিদের ছেলে আলী আহম্মেদ মাবরুর কারাগারে গিয়ে শেষ দেখার পর গণমাধ্যমকে বলেন, দুজনে
র কেউই রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাননি।
এর আগে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ফাঁসি কার্যকর হওয়া জামায়াত নেতা আবদুল কাদের মোল্লা ও কামারুজ্জামান রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাননি। গতকাল মুজাহিদের ক্ষমা প্রার্থনা নিয়ে তাঁর দল জামায়াতও দ্বিমত পোষণ করে।
















PreviousNextমানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে প্রথম ফাঁসি কার্যকর করা হয় ২০১৩ সালের ১২ ডিসেম্বর। ওই দিন রাত ১০টা ১ মিনিটে কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকর হয়। দ্বিতীয় ফাঁসি কার্যকর হয় চলতি বছরের ১১ এপ্রিল রাত সাড়ে ১০টায় কামারুজ্জামানের।
গতকাল রাতে সাকা চৌধুরী ও মুজাহিদের ফাঁসি কার্যকরের সময় উপস্থিত ছিলেন কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ ইফতেখার উদ্দীন, কারা তত্ত্বাবধায়ক জাহাঙ্গীর কবীর, কারাধ্যক্ষ নেছার আলম, ঢাকার জেলা প্রশাসক তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া, ঢাকার সিভিল সার্জন আবদুল মালেক মৃধা প্রমুখ। নিয়মানুযায়ী ফাঁসি কার্যকরের পর প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া শেষে কারাগারের চিকিৎসক তাঁদের মৃত ঘোষণা করেন।
রাত ২টা ৪৯ মিনিটে দুজনের মরদেহবাহী অ্যাম্বুলেন্স কারাগার থেকে গ্রামের বাড়ির উদ্দেশে রওনা হয়।
কারাগার সূত্র জানায়, শাহজাহান ও রাজুসহ ছয়জন জল্লাদ সাকা চৌধুরী ও মুজাহিদের ফাঁসি কার্যকর করতে সহায়তা করেন। ফাঁসি কার্যকর হওয়ার পর কারাগারের ভেতরে লাশ দুটির ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করা হয়। এরপর গোসল করানো হয়। কাফন পরিয়ে লাশ দুটি কফিনে ভরে গাড়িতে তোলা হয়। মৃতদেহ কারাগার থেকে নিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেন কারা তত্ত্বাবধায়ক। এরপরই লাশবাহী গাড়ি কারাগার থেকে বেরিয়ে যায়।
এর আগে রাত সাড়ে আটটার দিকে সাকা চৌধুরী ও মুজাহিদের পরিবারের সদস্যদের দেখা করার জন্য খবর দেয় কারা কর্তৃপক্ষ। রাত নয়টায় সাকা চৌধুরীর স্বজনেরা কারা ফটকে যান। স্বজনদের মধ্যে ছিলেন সাকা চৌধুরীর স্ত্রী ফারহাত কাদের চৌধুরী, দুই ছেলে ফজলুল কাদের চৌধুরী, হুম্মাম কাদের চৌধুরীসহ বেশ কয়েকজন সদস্য। প্রায় একই সময়ে মুজাহিদের পরিবারের সদস্যরা কারা ফটকে পৌঁছান। তাঁরা দীর্ঘ সময় ভেতরে সাকা ও মুজাহিদের সঙ্গে কথা বলেন।
সাকা চৌধুরী ও মুজাহিদের ফাঁসি কার্যকর করতে গতকাল সকাল থেকেই নানা তৎপরতা শুরু করে কারা প্রশাসন। সে অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ের আগেই কারাগারে আসতে থাকেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। সন্ধ্যার পর দুটি অ্যাম্বুলেন্স গিয়ে পৌঁছায় কারা ফটকে। সন্ধ্যা থেকে পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন সড়কমুখী সব কটি পথ বন্ধ করে দেয় পুলিশ। গণমাধ্যমকর্মী ও স্থানীয় বাসিন্দা ছাড়া ওই সড়কে কাউকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। আশপাশের ভবনগুলোর ছাদেও পুলিশ মোতায়েন করা হয়। কারাগারের আশপাশে কয়েক ধাপে বাড়ানো হয় নিরাপত্তা।
বিজয়ের আগ মুহূর্তে বাঙালি জাতিকে মেধাশূন্য করার নীলনকশা হাতে নিয়ে বুদ্ধিজীবী নিধনযজ্ঞ চালিয়েছিল পাকিস্তানি সেনা ও গুপ্তঘাতক আলবদর বাহিনী। বুদ্ধিজীবীদের হত্যার দায়ে সেই আলবদর বাহিনীর অন্যতম নেতা মুজাহিদকে ২০১৩ সালের ১৭ জুলাই ফাঁসির আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। চলতি বছরের ১৬ জুন সেই ফাঁসির সাজা বহাল রাখেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। পরে ফাঁসির রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে আবেদন করেন মুজাহিদ। ১৮ নভেম্বর ওই আবেদনও খারিজ করে দেন আপিল বিভাগ।
মুক্তিযুদ্ধকালে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ২০১৩ সালের ১ অক্টোবর সাকা চৌধুরীকে সর্বোচ্চ সাজা দিয়েছিলেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। ৩৩ মাসের বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে চলতি বছরের ২৯ জুলাই ট্রাইব্যুনালের দেওয়া সেই ফাঁসির আদেশ বহাল রাখেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত। এরপর ওই রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন করেন সাকা চৌধুরী। তবে ১৮ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ পুনর্বিবেচনার ওই আবেদন খারিজ করে দেন।
জাতীয় রাজনীতিতে বহু বিতর্কিত মন্তব্য করে সমালোচনার জন্ম দেওয়া সাকা চৌধুরী ১৯৭৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত ছয়বার সাংসদ নির্বাচিত হয়েছেন। মুসলিম লীগ থেকে তিনি রাজনীতি শুরু করেন, পরে জাতীয় পার্টিতে যোগ দেন। স্বৈরশাসক এরশাদের সামরিক শাসনামলে তিনটি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেন। সর্বশেষ ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য। প্রায় চার দশকের রাজনৈতিক জীবন, তারপরও বারবার সংবাদ শিরোনাম হয়েছেন মূলত ব্যঙ্গ-বিদ্রূপে ভরা কথার জন্য।
মুক্তিযুদ্ধকালে সাকা চৌধুরী কাজ করেছিলেন পাকিস্তানি দখলদার সেনাদের সহযোগী হিসেবে। তাঁর বাবা ফজলুল কাদের চৌধুরী ছিলেন কনভেনশন মুসলিম লীগের সভাপতি ও পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের স্পিকার। ট্রাইব্যুনালের রায়ে বলা হয়েছে, মুক্তিযুদ্ধের সময় ফজলুল কাদেরের স্বাধীনতাবিরোধী ভূমিকার অন্যতম অংশীদার ছিলেন তাঁর ছেলে সাকা চৌধুরী। বাবার নির্দেশ পালন করার জন্য একাত্তরের ১৩ এপ্রিল চট্টগ্রামের রাউজানে কুণ্ডেশ্বরী ঔষধালয়ের প্রতিষ্ঠাতা নূতনচন্দ্র সিংহকে তিনি পাকিস্তানি সেনাদের সহায়তায় হত্যা করেন। এটিসহ চারটি অপরাধে সাকা চৌধুরীকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছিলেন ট্রাইব্যুনাল। এর প্রতিটিতে ফাঁসি বহাল রাখেন আপিল বিভাগ।
গতকাল রাতে সাকা চৌধুরী ও মুজাহিদের ফাঁসি কার্যকরের সময় উপস্থিত ছিলেন কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ ইফতেখার উদ্দীন, কারা তত্ত্বাবধায়ক জাহাঙ্গীর কবীর, কারাধ্যক্ষ নেছার আলম, ঢাকার জেলা প্রশাসক তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া, ঢাকার সিভিল সার্জন আবদুল মালেক মৃধা প্রমুখ। নিয়মানুযায়ী ফাঁসি কার্যকরের পর প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া শেষে কারাগারের চিকিৎসক তাঁদের মৃত ঘোষণা করেন।
রাত ২টা ৪৯ মিনিটে দুজনের মরদেহবাহী অ্যাম্বুলেন্স কারাগার থেকে গ্রামের বাড়ির উদ্দেশে রওনা হয়।
কারাগার সূত্র জানায়, শাহজাহান ও রাজুসহ ছয়জন জল্লাদ সাকা চৌধুরী ও মুজাহিদের ফাঁসি কার্যকর করতে সহায়তা করেন। ফাঁসি কার্যকর হওয়ার পর কারাগারের ভেতরে লাশ দুটির ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করা হয়। এরপর গোসল করানো হয়। কাফন পরিয়ে লাশ দুটি কফিনে ভরে গাড়িতে তোলা হয়। মৃতদেহ কারাগার থেকে নিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেন কারা তত্ত্বাবধায়ক। এরপরই লাশবাহী গাড়ি কারাগার থেকে বেরিয়ে যায়।
এর আগে রাত সাড়ে আটটার দিকে সাকা চৌধুরী ও মুজাহিদের পরিবারের সদস্যদের দেখা করার জন্য খবর দেয় কারা কর্তৃপক্ষ। রাত নয়টায় সাকা চৌধুরীর স্বজনেরা কারা ফটকে যান। স্বজনদের মধ্যে ছিলেন সাকা চৌধুরীর স্ত্রী ফারহাত কাদের চৌধুরী, দুই ছেলে ফজলুল কাদের চৌধুরী, হুম্মাম কাদের চৌধুরীসহ বেশ কয়েকজন সদস্য। প্রায় একই সময়ে মুজাহিদের পরিবারের সদস্যরা কারা ফটকে পৌঁছান। তাঁরা দীর্ঘ সময় ভেতরে সাকা ও মুজাহিদের সঙ্গে কথা বলেন।
সাকা চৌধুরী ও মুজাহিদের ফাঁসি কার্যকর করতে গতকাল সকাল থেকেই নানা তৎপরতা শুরু করে কারা প্রশাসন। সে অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ের আগেই কারাগারে আসতে থাকেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। সন্ধ্যার পর দুটি অ্যাম্বুলেন্স গিয়ে পৌঁছায় কারা ফটকে। সন্ধ্যা থেকে পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন সড়কমুখী সব কটি পথ বন্ধ করে দেয় পুলিশ। গণমাধ্যমকর্মী ও স্থানীয় বাসিন্দা ছাড়া ওই সড়কে কাউকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। আশপাশের ভবনগুলোর ছাদেও পুলিশ মোতায়েন করা হয়। কারাগারের আশপাশে কয়েক ধাপে বাড়ানো হয় নিরাপত্তা।
বিজয়ের আগ মুহূর্তে বাঙালি জাতিকে মেধাশূন্য করার নীলনকশা হাতে নিয়ে বুদ্ধিজীবী নিধনযজ্ঞ চালিয়েছিল পাকিস্তানি সেনা ও গুপ্তঘাতক আলবদর বাহিনী। বুদ্ধিজীবীদের হত্যার দায়ে সেই আলবদর বাহিনীর অন্যতম নেতা মুজাহিদকে ২০১৩ সালের ১৭ জুলাই ফাঁসির আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। চলতি বছরের ১৬ জুন সেই ফাঁসির সাজা বহাল রাখেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। পরে ফাঁসির রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে আবেদন করেন মুজাহিদ। ১৮ নভেম্বর ওই আবেদনও খারিজ করে দেন আপিল বিভাগ।
মুক্তিযুদ্ধকালে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ২০১৩ সালের ১ অক্টোবর সাকা চৌধুরীকে সর্বোচ্চ সাজা দিয়েছিলেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। ৩৩ মাসের বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে চলতি বছরের ২৯ জুলাই ট্রাইব্যুনালের দেওয়া সেই ফাঁসির আদেশ বহাল রাখেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত। এরপর ওই রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন করেন সাকা চৌধুরী। তবে ১৮ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ পুনর্বিবেচনার ওই আবেদন খারিজ করে দেন।
জাতীয় রাজনীতিতে বহু বিতর্কিত মন্তব্য করে সমালোচনার জন্ম দেওয়া সাকা চৌধুরী ১৯৭৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত ছয়বার সাংসদ নির্বাচিত হয়েছেন। মুসলিম লীগ থেকে তিনি রাজনীতি শুরু করেন, পরে জাতীয় পার্টিতে যোগ দেন। স্বৈরশাসক এরশাদের সামরিক শাসনামলে তিনটি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেন। সর্বশেষ ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য। প্রায় চার দশকের রাজনৈতিক জীবন, তারপরও বারবার সংবাদ শিরোনাম হয়েছেন মূলত ব্যঙ্গ-বিদ্রূপে ভরা কথার জন্য।
মুক্তিযুদ্ধকালে সাকা চৌধুরী কাজ করেছিলেন পাকিস্তানি দখলদার সেনাদের সহযোগী হিসেবে। তাঁর বাবা ফজলুল কাদের চৌধুরী ছিলেন কনভেনশন মুসলিম লীগের সভাপতি ও পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের স্পিকার। ট্রাইব্যুনালের রায়ে বলা হয়েছে, মুক্তিযুদ্ধের সময় ফজলুল কাদেরের স্বাধীনতাবিরোধী ভূমিকার অন্যতম অংশীদার ছিলেন তাঁর ছেলে সাকা চৌধুরী। বাবার নির্দেশ পালন করার জন্য একাত্তরের ১৩ এপ্রিল চট্টগ্রামের রাউজানে কুণ্ডেশ্বরী ঔষধালয়ের প্রতিষ্ঠাতা নূতনচন্দ্র সিংহকে তিনি পাকিস্তানি সেনাদের সহায়তায় হত্যা করেন। এটিসহ চারটি অপরাধে সাকা চৌধুরীকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছিলেন ট্রাইব্যুনাল। এর প্রতিটিতে ফাঁসি বহাল রাখেন আপিল বিভাগ।
২২ নভেম্বর ২০১৫
ফাঁসি
তৃতীয় ও চতুর্থ
সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী
রাত: ১২.৫৫ মি.
চার অপরাধে মৃত্যুদণ্ড
ঊনসত্তরপাড়া গণহত্যা
বণিকপাড়ায় গণহত্যা
নূতনচন্দ্র সিংহ হত্যা
শেখ মোজাফ্ফর ও
শেখ আলমগীরকে হত্যা
ফাঁসি
তৃতীয় ও চতুর্থ
সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী
রাত: ১২.৫৫ মি.
চার অপরাধে মৃত্যুদণ্ড
ঊনসত্তরপাড়া গণহত্যা
বণিকপাড়ায় গণহত্যা
নূতনচন্দ্র সিংহ হত্যা
শেখ মোজাফ্ফর ও
শেখ আলমগীরকে হত্যা
আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ
রাত: ১২.৫৫ মি.
যে অপরাধে মৃত্যুদণ্ড
মুক্তিযুদ্ধকালে আলবদর বাহিনীর সদর দপ্তরে বুদ্ধিজীবী হত্যার পরিকল্পনা, ষড়যন্ত্র, উসকানি ও সহযোগিতা
রাত: ১২.৫৫ মি.
যে অপরাধে মৃত্যুদণ্ড
মুক্তিযুদ্ধকালে আলবদর বাহিনীর সদর দপ্তরে বুদ্ধিজীবী হত্যার পরিকল্পনা, ষড়যন্ত্র, উসকানি ও সহযোগিতা
No comments:
Post a Comment