Sunday, November 22, 2015

বস্নাড ক্যান্সারে মুখের সমস্যা ওরাল ক্যান্সার


Image result for মুখের সমস্যা pictureওরাল ক্যান্সার সাধারণত স্কোয়ামাস সেল কারসিনোমা জাতীয় হয়ে থাকে। যে সব স্থানে বেশি হয়ে থাকে সেগুলো হলো-ঠোঁট, জিহ্বার পাশের অংশ এবং মুখগহ্বরের উপরিভাগে। ঠোঁটের ক্যান্সার সাধারণত নিচের ঠোঁটে বেশি হয়ে থাকে। নিচের ঠোঁটে ক্রমাগত সূর্যের আলো পড়তে থাকলে এবং যারা সব সময় এবং দীর্ঘদিন সূর্যের আলোতে কাজ করে থাকেন তাদের নিচের ঠোঁট ক্যান্সারে আক্রান্ত হতে পারে। যাদের গায়ের রং সাদা তারা কা্যান্সারের বেশি ঝুঁকির মধ্যে থাকেন। আবার ঠোঁটের নির্দিষ্ট একটি জায়গায় সিগারেট ধরে ধূমপান করলে সে স্থানটিতে ক্যান্সার রোগের সৃষ্টি হতে দেখা যায়। অ্যালকোহল সেবন এবং ধূমপান মুখের ক্যান্সারের অন্যতম কারণ। এছাড়া পান, সুপারি, গুল, খৈনিও মুখে ক্যান্সারের সৃষ্টি করে থাকে। প্রিম্যালিগন্যান্ট লিশন বলতে বোঝায় ক্যান্সারের পূর্বাবস্থার রোগ। প্রিম্যালিগন্যান্ট লিশন বা ওরাল ক্যান্সারের পূর্বরোগগুলোর মধ্যে ইরাইথ্রোপ্লাকিয়া অথবা লেউকোপ্লাকিয়া অন্যতম। লিউকোপ্লাকিয়া সন্দেহজনক হলে বায়োপসি বা কোষ পরীক্ষা করা জরুরি। এইচআইভি ভাইরাস ব্যাপকভাবে বিস্তারের কারণে ওরাল লিস্ফোমা এবং ক্যাপোসিস সারকোমা জাতীয় ক্যান্সার এখন তুলনামূলকভাবে বেশি দেখা যায়। 
মুখের ক্যান্সারের মধ্যে লালাগ্রন্থির টিউমারগুলোর মধ্যে প্লিওমরফিক এডেনোমাই উল্লেখযোগ্য। কিন্তু প্যারেটিড লালাগ্রন্থির চেয়ে সাবলিংগুয়াল এবং সাবম্যান্ডিবুলার লালাগ্রন্থিতেই ক্যান্সার হতে বেশি দেখা যায়। কিন্তু শিশুদের ক্ষেত্রে লালাগ্রন্থির সবগুলোতেই ক্যান্সারের হার বেশি। ওরাল রোগীদের ক্ষেত্রে মারাত্মক মানসিক চাপ দেখা যেতে পারে। কথা বলতে সমস্যা বা খাবার গলধঃকরণে সমস্যা দেখা যেতে পারে। তাই ওরাল ক্যান্সার বা যে কোনো ধরণের ক্যান্সারের রোগীদের অবহেলা না করে দ্রুত যথাযথ চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে। 


বস্নাড ক্যান্সারে যে ধরণের কোষ বিনাশকারী ওষুধ প্রয়োগ করা হয় তা ক্যান্সার সেলকে ধ্বংস করে, কিন্তু পাশাপাশি কিছু সুস্থ কোষকেও নষ্ট করে। তাই দেহের অন্যান্য অংশের পাশাপাশি মুখেরও বিভিন্ন সমস্যা দেখা যায়। বস্নাড ক্যান্সারের দাঁতের চিকিৎসার সময় স্থানীয় অবশকারী ইনজেকশন না দেওয়াই ভালো, যদি বেশি রক্তপাতের ঝুকি থাকে তাহলে বস্নাড ক্যান্সারের চিকিৎসা চলাকালীন সময়ে দাঁত তোলা ঠিক নয়। কারণ এ সময় বেশি রক্তপাত হতে পারে এবং সংক্রমণের দ্বারা অস্টিওমাইলাইটিসও হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। বস্নাড ক্যান্সার চিকিৎসা চলাকালীন সময়ে যদি ডেন্টাল সার্জারি বাধ্যতামূলক হয়, তাহলে সার্জারির আগে রক্ত পর্যন্ত দেওয়া লাগতে পারে। সার্জারির পর ক্ষত না শুকানো পর্যন্ত এন্টিবায়োটিক সেবন করা উচিত। এন্টিবায়োটিক হিসেবে পেনিসিলিনই ভালো। বস্নাড ক্যান্সার রোগীর মাংসপেশীতে কোনো ইনজেকশন প্রদান করা ঠিক নয়, কারণ এর ফলে হেমাটোমা তৈরি হতে পারে। দাঁতের ব্যথায় অ্যাসপিরিন জাতীয় ওষুধ সেবন করা যাবে না। কারণ এমনিতেই মাড়ি থেকে রক্তপাতের ঝুঁকি থাকে। বস্নাড ক্যান্সারে মাঝে মাঝে মাড়ির নির্দিষ্ট অংশ অথবা পুরো মাড়ি ফুলে যেতে পারে। আবার ওরাল মিউকোসা বা মাড়িতে আলসার হতে পারে। বস্নাড ক্যান্সারে মুখে ক্যান্ডিডোসিস হতে বেশি দেখা যায়। হারপেটিক সংক্রমণ কখনো কখনো মারাত্মক সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। এছাড়া টনসিল গ্রন্থি ফুলে যেতে পারে। ম্যান্ডিবল বা নিচের চোয়াল এবং প্যারোটিড লালাগ্রন্থির উপরে ব্যাথাযুক্ত ফোলাভাব হতে পারে। অনেক কোষ বিনাশকারী ওষুধ ওরাল মিউকোসাতে প্রদাহ এবং মাঝে মাঝে মুখে আলসার সৃষ্টি করে থাকে। মুখে মারাত্মক রক্তপাত বিশেষ করে মাড়ির পাশ থেকে হতে পারে রক্তের অনুচক্রিকার পরিমাণ করে গিয়ে। 
এক নজরে বস্নাড ক্যান্সারে মুখের সমস্যা
ক) লসিকাগ্রন্থি বা লিস্ফনোড বড় হয়ে যাওয়া, খ) মাড়ি থেকে রক্তপাত, গ) সংক্রমণ-ক্যান্ডিডোসিস এবং অন্যান্য ফাঙ্গাল সংক্রমণ, ঘ) হারপিস ভাইরাস সংক্রমণ, ঙ) মুখে ঘা বা আলসার সাধারণত হারপিস ভাইরাস এবং ক্যান্সার বিনাশকারী ওষুধের মাধ্যমে হয়ে থাকে, চ) মাড়ি ফুলে যাওয়া 
ছ) ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ঃ ১) ওরাল আলসার, ২) শুষ্কমুখ, ৩) পিগমেন্টেশন, ৪) ক্যান্ডিডোসিস। তাই বস্নাড ক্যান্সার রোগীর ক্যান্সারের পাশাপাশি মুখের সমস্যাগুলোর প্রতি যত্মবান হতে হবে।

No comments:

Post a Comment

কাঁচা মরিচের রয়েছে বিস্ময়কর স্বাস্থ্য উপকারিতা

তরকারিতে স্বাদ বাড়াতে কাঁচা মরিচের জুড়ি নেই। কেউ কেউ আবার খাবারের সময় অতিরিক্ত কাঁচা মরিচ নিয়ে রুচিসহকারে খেতে থাকেন। তাঁদের জন্য আরও সুখ...