কানে পানি ঢোকা রোগে বড়দের সঙ্গে সাধারনত ছোট ছেলেমেয়েরাই বেশি আক্রান্ত হয়। শিশুদের গলার ভেতরে শ্বাস ও খাদ্যনালীর মুখে অবস্থিত লসিকাগ্রন্থি বড় হওয়া, গলা ও মধ্যকর্ণের সংযোগনালীর (শ্রুতিনালী) কাজে সমস্যা থাকা, এলার্জি, ভাইরাসের আক্রমণ এবং মধ্যকর্ণে যন্ত্রণার কারণে এই সমস্যা হতে পারে। বায়ুর চাপ কমে চারপাশের রক্তনালী হতে তরল পদার্থ মধ্যকর্ণে জমা হয়। বর্তমান বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশে পরিসংখ্যানগত বিশ্লেষণে কানে পানি জমা রোগের হার খুবই বেশি।
মধ্যকর্ণে তরল পদার্থ শিশুর শ্রবনশক্তি হ্রাসের অন্যতম কারণ। ভাষাশিক্ষা বিঘ্নিত হয়, বুদ্ধিবৃদ্ধি ও মানসিক বিকাশ ব্যহত হয়, স্কুলে দক্ষতা কমে যায় এবং সঙ্গে শিশুর ব্যবহারের পরিবর্তনও লক্ষ্য করা যায়। শিশুর বয়স ৪ থেকে ৫ বছরে এই সমস্যা সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। আক্রান্ত শিশুর ৯৫% পর্যন্ত এমনিতেই সেরে যায় তবে ৫% এর ক্ষেত্রে এক বছরের বেশি সময় স্থায়ী হয়। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে এ রোগের প্রকোপ কমে যেতে থাকে। তবে বড়দের ক্ষেত্রে সঠিক চিকিৎসার অভাবে রোগটি স্থায়ী হয়ে যেতে পারে।
রোগের কারণ
* সর্দি-কাশি-নাক বন্ধ হয়ে ঘন ঘন শ্বাসনালীর সংক্রমন।
* প্রায়ই এলার্জি জনিত নাকের প্রদাহ।
* ক্রনিক টনসিলের ইনফেকশন।
* শিশুদের ক্ষেত্রে নাকের পিছনে এডিনয়েড নামক লসিকাগ্রন্থি বড় হয়ে যাওয়া।
* নাকের হাড় বাকা বা ক্রনিক সাইনোসাইটিস এর সমস্যা।
* ভাইরাল ইনফেকশন।
এই রোগে কানের মধ্যে ভোঁ ভোঁ শব্দ হয়। কানে কম শোনা যায়। সংক্রমণ বেশি তীব্র হলে কানের পর্দা ফুটো হয়ে কান বেয়ে রক্ত মিশ্রিত পানি বের হতে পারে। এ রকম জটিলতার আগেই একজন নাক-কান-গলার চিকিৎসকের শরনাপন্ন হওয়া উচিত। এ ধরণের রোগে চিকিৎসক কান পরীক্ষার মাধ্যমে সাধারণত এন্টি-হিস্টামিন, বয়স উপযোগী নাকের ড্রপ, প্রয়োজনে অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে চিকিৎসা করে থাকেন। ব্যথা কমাতে প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ খেতে পারেন।
No comments:
Post a Comment